সমস্যা সমাধান বা কার্য সম্পাদনের উদ্দেশ্যে কম্পিউটারের ভাষায় ধারাবাহিক ভাবে সাজানো নির্দেশমালাকে প্রোগ্রাম বলে । প্রোগ্রাম বা প্রোগ্রাম সমষ্টি যা কম্পিউটারের হার্ডওয়্যার ও ব্যবহারকারীর মধ্যে সম্পর্ক সৃষ্টির মাধ্যমে হার্ডওয়্যারকে কার্যক্ষম করে তাকেই সফটওয়্যার বলে। সফটওয়্যার হলো কম্পিউটারে ব্যবহার করা যায় এমন সমন্বিত প্রোগ্রাম বিশেষ। কম্পিউটার অন্যের সাহায্য ছাড়া নিজে কখনো কোন কিছু করতে পারে না। প্রয়োজনীয় কাজটি সম্পন্ন করতে একটি নির্দেশ গ্রহণ করে থাকে। সফটওয়্যার হচ্ছে হার্ডওয়্যারের প্রাণশক্তি বা জীবনী শক্তি অর্থাৎ সফটওয়্যার ছাড়া হার্ডওয়্যার অর্থহীন।
সফটওয়্যারের বৈশিষ্ট্য
বিভিন্ন কম্পিউটারের ব্যবহৃত সফটওয়্যারের কিছু সাধারণ বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা হয়। এই বৈশিষ্ট্যগুলো উল্লেখ করা হলো—
১. আপগ্রেডেবিলিটি (Upgradability) : সফটওয়্যারের একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো আপগ্রেডেবিলিটি বা উচ্চতর স্তরে উন্নীতকরণ। সফটওয়্যার প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান সাধারণত একটি নির্দিষ্ট সময় পরপরই আপগ্রেডেড ভার্সনের সফটওয়্যার বাজারে প্রকাশ করে। কাজেই বিদ্যমান সফটওয়্যার ও সফটওয়্যার দ্বারা তৈরি করা ডকুমেন্ট নতুন ভার্সনের সফটওয়্যার দ্বারা আপগ্রেড করার প্রয়োজন হতে পারে।
তবে সফটওয়্যার আপগ্রেডিবিলিটি বৈশিষ্ট্য ব্যহারকারীদের জন্য অনেক সময় বিরক্তির কারণ হয়ে দাড়ায়। অনেক সময় আপডেট সফটওয়্যারে নির্মিত ডকুমেন্ট বা ফাইল Downwordly Compatible বা নিম্নমুখী উপযুক্ততা থাকে না। যেমন— ভার্সন — ৭ এ নির্মিত ডকুমেন্ট ভার্সন – ৬ এ পড়া যাবে না।
• নতুন ভার্সনের সফটওয়্যারে সাথে পূর্বের সফটওয়্যারের মধ্যে অনেক ফাংশনের কার্যক্রমের অমিল থাকে। তাই ডকুমেন্ট পূর্বের ভার্সনে সংরক্ষণ করলে ডেটার ফরমেটিং হারিয়ে যায়।
• আপগ্রেডেড সফটওয়্যারের জন্য সাধারণত বেশি মেমোরি, ডিস্ক স্পেস ও দ্রুত গতির প্রসেসরের প্রয়োজন হয়। এমনকি হার্ডওয়্যার আপগ্রেডের প্রয়োজন হয়। ফলে সফটওয়্যার ব্যবহারকারীকে কিছুদিন পর পর সফটওয়্যার ও হার্ডওয়্যার আপগ্রেড করার জন্য অর্থ খরচ করতে হয়।
২. বহনযোগ্যতা (Portability): সফটওয়্যারের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো পোর্টেবিলিটি। কোনো কম্পিউটারের একটি গ্রোগ্রামে তৈরি ডকুমেন্ট বা ফাইল অন্য আরেকটি কম্পিউটারের একই প্রোগ্রামে চালু করে কাজ করার বৈশিষ্ট্যকে বহনযোগ্যতা বা Portability বলে। অর্থাৎ এক কম্পিউটার থেকে অন্য কম্পিউটারে ফাইল ট্রান্সফারকেও বোঝায়। বিভিন্ন কারণে কম্পিউটারে এক সফটওয়্যারের ডেটা অন্য আরেকটি সফটওয়্যারে স্থানান্তর করতে হয়। যেমন-
• MS Word এর তৈরি রিপোর্টে MS Excel এর ওয়ার্কশিটে Insert করার প্রয়োজন।
• গবেষণার কাজে ইন্টারনেট হতে আর্টিকেল Download করার প্রয়োজন।
•UNIX মেশিন ব্যবহারকারী ই-মেইলের মাধ্যমে WINDOWS XP ব্যবহারকারীর নিকট কোনো ফাইল প্রেরণের প্রয়োজন।
৩. অবজেক্ট লিংকিং এন্ড এম্বেডিং (Object Linking & Embedding-OLE): সফটওয়্যারের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো অবজেক্ট লিংকিং এন্ড এম্বেডিং। কম্পিউটারের বিভিন্ন প্রোগ্রাম নিজেরদের মধ্যে উপাত্ত ও তথ্য আদান-প্রদান করতে পারে। এই বৈশিষ্ট্যকে বলা হয়— অবজেক্ট লিংকিং এন্ড এম্বেডিং। যেমন MS Word এ তৈরি কোনো রিপোর্টে যদি MS Excel এ তৈরি কোনো চার্ট বা গ্রাফ এর প্রয়োজন হয় তবে ওয়ার্ডের ডকুমেন্টটির সাথে স্প্রেডশিটকে লিংক অথবা এম্বেড করা হয়। মাইক্রোসফট ওয়ার্ডে Insert এর মাধ্যমেই এই কাজটি সম্পন্ন করা হয়। ডেটা কোথায় সংরক্ষণ করা হয় এবং গন্তব্য ফাইলে উহা কিভাবে আপডেট করা হয় তার উপর ভিত্তি করে লিংক অবজেক্ট ও এম্বেডেড অবজেক্টের মধ্যে পার্থক্য নিরুপন করা হয়। যদি মূল ডেটার পরিবর্তনের সাথে সাথে তথ্যে পরিবর্তন পরিলক্ষিত হওয়ার প্রয়োজন হয়। সেক্ষেত্রে লিংক অবজেক্ট ব্যবহার করা হয়। যেমন যদি Microsort Excel এর ওয়ার্ক বুকের কিছু Cell লিংকড অবজেক্ট হিসাবে ওয়ার্ড ডকুমেন্টে সংরক্ষণ করা হয়, তবে Work Book-এ কোনো পরিবর্তনের সাথে সাথে ওয়ার্ড ডকুমেন্টে সংরক্ষণ করা হয় তবে Work Book-এ কোনো পরিবর্তনের সাথে সাথে ওয়ার্ড ডকুমেন্ট তথ্যও আপডেট হয়ে যায়।
এম্বেডেড অবজেক্ট ডেস্টিনেশন (গন্তব্য) ফাইলের অংশ হয়ে যায়। যেহেতু এম্বেডেড অবজেক্ট এর মূল ফাইলের সাথে কোনো সম্পর্ক বা লিংক থাকে না তাই মূল ফাইলে পরিবর্তন হলে ডেস্টিনেশন ফাইলে কোনো আপডেট হয় না। তবে একে ডাবল ক্লিকের মাধ্যমে edit করা সম্ভব।
Read more